বাঁশখালী একটি প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপূর অপার সম্ভাবনার জনপদ। আমাদের পূর্বে পাহাড়, পশ্চিমে বিশাল বিস্তীর্ণ বঙ্গোপসাগর এবং মাঝখানে রয়েছে উর্বর সমভুমি, যে সমভুমিতে সত্যিকার অর্থেই সোনা ফলে।
বাঁশখালীর মতো উর্বর, বেলে, এবং বেলে দোঁআশ মাটির উচু সমভুমি বাংলাদেশের খুব কম এলাকাতেই আছে। মহান আল্লাহর অপার কৃপায় আমাদের ভুমিগুলো ফসলের মৌসুমে প্লাবিত হয়না, তপ্ত খরায় একেবারে শুকিয়ে যায়না। ধান চাষের পাশাপাশি বিপুল পরিমাণে সবজির আবাদ হয় আমাদের বাঁশখালীতে, চমৎকার ফলন হয় বাহারি দেশীয় ফলের। কালীপুরের লিচুতো পুরো দেশেই বিখ্যাত।
আমাদের কৃষকরা ইতোমধ্যে উচ্চফলনশীল ও অত্যান্ত লাভজনক কিছু ফসলের চাষে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছে। আল্লাহর অসীম দয়ায় এই মাটি কোন কিছুতেই আমাদের ফিরিয়ে দিচ্ছেনা, যা ই রোপন করা হচ্ছে আবারিত ফলন আসছে আমাদের মাঠজুড়ে।

পুকুরিয়ায় চা বাগানের এর মতো একটি অতি লাভজনক কৃষি সম্পদ আছে, আছে পান সহ নানা অর্থকরী চাষাবাদ। আমাদের বিস্তীর্ণ উপকূল জুড়ে আল্লাহর অপার নেয়ামত। মাছ চাষের পাশাপাশি লবন শিল্পে আমাদের ভাগ্য গড়ার জন্য রয়েছে অবারিত সম্ভাবনা।
এমন সোনার দেশে “গ্লোবাল ইকোনোমির” নামে বিদেশী বেনিয়াদের হাতে আমাদের সম্ভাবনা তুলে দিয়ে কোটি কোটি টকা লোপাটের ভোজবাজি দেখাতে ব্যাস্ত আমাদের কিছু নেতা।
ইতোমধ্যেই মাফিয়া এসআলমের হাত ধরে আমাদের বিশাল উপকূল দখল হয়ে গেছে। ভারতীয় সিমান্তের মতো কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে আমাদের জেলেদের সমূদ্রে যাওয়ার পথ করে রেখেছিল গন্ডামারার বিস্তীর্ণ উপকূলজুড়ে। এসব আপনারা দেখেছে।
চায়না সেপকোর হাতে গন্ডামারার হাজার হাজার একর ফসলী, লবন শিল্প ও মাছ চাষের জমি তুলে দিয়ে অত্র এলাকার হাজার হাজার মানুষকে নিদারুন বেকারত্বের দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। গগণ চুম্বী বিশাল চিমনির কালো ধোঁয়ায় পুরো বাঁশখালী একটা স্লো পয়জনিং এর শিকার হলেও হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পে কর্মসংস্থান হয়নি একজন স্থানীয় মানুষেরও।
এসব ভোজবাজির উন্নয়ন প্রকল্পে সাময়িকভাবে কিছু মানুষ লাভবান হলেও ক্ষতির প্রভাব সুদূরপ্রসারী। আমরা এমন দাসখতের উন্ন্যনের জন্য আমাদের আর এক ইঞ্চি ভূমির উপরও কোন গ্লোবাল জায়ান্টের তার কাঁতার বেড়া বা খুটি গাড়তে দিবোনা ইনশাআল্লাহ।
তার মানে আমরা কি উন্নয়নকে অস্বীকার করছি? আমরা কি আপডেটেড টেকনোলজি ও বৈশ্বিক উন্নয়ন থেকে আমাদের জনপদকে পিছিয়ে রাখবো?
না। আমরা উন্নত বিশ্বের ফেলে থার্ড ক্লাশ ইকোনোমিক সিস্টেমের পরিবর্তে সাসটেইনাবল গ্রীন ইকোনমি তৈরীর মাধ্যমে একটি সমৃদ্ধ বাঁশখালী গড়তে চাই, যেখানে আমাদের অর্থনীতির কদর থাকবে গ্লোবাল মার্কেটপ্লেসে এবং একই সাথে ভারী শিল্পের দুষণ ও ঝনঝানি মুক্ত বাঁশখালী হবে একটি নিরাপদ ও বসবাসযোগ্য জনপদ।
আমাদের গ্রীন ইকোনোমির পরিকল্পনা আসছে আরেকটি পর্বে ইনশাআল্লাহ।
